আলমগীর মাহমুদ
১.
‘ঈদ মোবারক ২০২৩’…যেটি পৃথিবীর ইতিহাসে কোনদিনই আসিবে না আর..কারো জীবনেতো না ই না..!
সে দিনটায় পরাণের মানুষ প্রাণের মানুষ। প্রাণের উত্তর, দক্ষিণ,পূর্ব, পশ্চিম, ঈশান, বায়ু, অগ্নি, নরিদ কোণায়ও যারা বসবাস করে তাদেরও স্মরণে দরদী ঢেউ একবার ভিজিয়ে যায়…
এ যেন মানুষ্যজাতির জুন ফাইনালে দরদের হালসন নাগাদ প্রক্রিয়া। মানব জীবনের অমূল্য সম্পদ।
ঘরে ঘরে কোর্মা পোলাও চটপটি বিরিয়ানী সেমাইয়ের পসরা সাঁজিয়ে জাত, গোত্র, ধর্ম, বর্ণ ধনী, ধনহীন, পরিচিত, অপরিচিত সবাইর জন্যই মনের গহীনে খচিত রয় অলিখিত দরদি পোষ্টার ..এসো হে..! এসো..!
২.
এমন দিনটি স্মৃতিপ্রবণ করে রাখতে ছোট বয়সে ভিউ কার্ড কিনে মনের মাধুরীতে, দরদের কালিতে, ভালবাসার বর্ণমালায় লিখা হতো ভিউকার্ডের বুকে থাকা সাদা পাতলা মসৃণ কাগজটিতে..
.প্রতিটা কার্ড এমন কালি কলম হরফের ছোঁয়া ছূঁয়ে দিতে পাঠানো হতো ঈদ শুভেচ্ছায় প্রাণের মানুষগুলোর প্রাণে…এটি তখন নিছক আর কাগজ রইতো না..
হয়ে রইতো জিবে ক্ষয়ে না যাওয়া লেনছুস(লজেন্স)..বিশেষ দিন যাবার পরও সে ফুরিয়ে যাওয়া আতরের শিষির মতো ষ্মেল হয়ে রইতো মনের সিন্দুকে। রইতো ঘরের অতিবা সংরক্ষিত স্থানে।
অনেকদিন পর পর পুরানা জিনিসপত্র ময়লা পরিস্কারে যখন কোন কাগজের পুটলিতে এটি হাতে পড়তো ‘ময়লা ঝাড়া বন্ধ’ এটিই যেন হয়ে উঠতো মনের পাঠশালার বরই(কূল) আচার…
৩.
প্রত্যেক শুভেচ্ছা যুগের মানস চিত্র হয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হয়ে রইতো। ইদানীং অনেকেই আমারে দোষতে শুরু করেছে.. স্যার কোন শুভেচ্ছার উত্তর দেয় না। মন্তব্য করে না।মনে মনে রাগ ক্ষোভ অভিমানও পোষে। তাদের আড্ডায় শব্দের বিনিময় চলে…
‘ স্যার তারা পুরানো জমানার মানুষতো!’ আবার কেউ…’আলমগীর স্যারর বেইল( বেলা) গিয়ই (গেছে) !’
প্রিয় মানুষেরে তার নিজের মতো করে সাপ্লাই না পেলে কেউ আর রয়না কাছে বাচ্চার আবদার পূরণে ব্যর্থ হলে যেমন শুনতে হয়… তুমি … ‘ পঁচা’! তুমি..’পঁচা ‘ কথা কইমু না..!
যুগ এমন বদলেছে আমার যুগের অচলই আজ ভালবাসার মাধ্যম।সে যুগে স্বাচ্ছা বলে যাহ আজ তাহ এনালগ এনালগ।
৪.
আজকালকার শুভেচ্ছায় ঈদ মোবারকের গায়ে সাঁটানো হয় নিজ ছবি।ছবিটা বড় ঈদ মোবারক তার চেয়ে ছোট। হুবহু যেন নির্বাচনী পোষ্টার।
আবার অনেকে ঈদ শুভেচ্ছায় এমন মেসেইজ করে যেটি হাজার জনের কাছে পাঠান যায়।তারপর সে পাঠায় হাজারে হাজার,তেলমার্কা প্রাপ্তিস্বীকার না পেলে প্রানহীন অসামাজিক ভাবতে রয়।
পর বছর হাজারী ভালবাসার লিষ্টি থেকেও দেয় বাদ ..একসময় সে বাদ যেতে যেতে শূর্ণ্যের কোটাই রয় তার জন্য অবশিষ্ঠ।
যুগের সাথে তাল মেলাতে না পারা আরেক অযোগ্যতা। ‘হেতারল্যায় আঁই কারে মিছা ভালবাসা দেখাই ন’
লেখক:– বিভাগীয় প্রধান।সমাজবিজ্ঞান বিভাগ উখিয়া কলেজ কক্সবাজার।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।